ইসলামী ব্যাংকের ছাঁটাই বন্ধ ও কর্মীদের পুনর্বহালের দাবি -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

 


ইসলামী ব্যাংকের ছাঁটাই বন্ধ ও কর্মীদের পুনর্বহালের দাবি
-লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

দুই দিনে ছাটাই করা হয়েছে ২০০জন। ওএসডিকৃত ব্যাংকারের সংখ্যা ৪৯৫৩ জন। পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে ৪১৪ জন। টক অব দ্যা টাউন। অন্যায় ভাবে ছাটাই করা হচ্ছে ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের। শ্রম আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘনের মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণহারে বরখাস্ত এবং শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি (IBBL) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গত ৫ই আগস্ট ২০২৪ইং-এর পর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় এই ধরনের ঘটনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগী কর্মীরা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এই বিতর্কিত প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, যার কেন্দ্রবিন্দু এখন চট্টগ্রাম।
​'বিশেষ দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা' নিয়ে বিতর্ক ও নির্যাতনের অভিযোগে ​সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকটির বেশ কিছু কর্মকর্তা অভিযোগ করেন যে, হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে আয়োজিত 'বিশেষ দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা' (Special Competency Assessment Test) বর্জন করার কারণে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কর্মকর্তা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাঁদের দাবি, পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া কর্মকর্তাদের 'মব সৃষ্টি করে পিটিয়ে ব্যাংক শাখা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে'।
কর্মকর্তারা ২৭ সেপ্টেম্বর এই বিতর্কিত পরীক্ষাটিকে আসলে গোপন ছাঁটাই প্রক্রিয়ার একটি অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যা শ্রম আইন, ব্যাংকের সার্ভিস রুলস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। সংবাদ সম্মেলনের পরে তারা প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমকে এই বিষয়ে একটা স্মারকলিপি দেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
​আঞ্চলিকতার প্রশ্ন ও ছাঁটাইয়ের শিকার কর্মীদের দাবি
​আন্দোলনরত কর্মীদের অভিযোগের মধ্যে আঞ্চলিকতার বিষয়টিও জোরালোভাবে উঠে এসেছে। অনেকের মন্তব্য, এই ছাঁটাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মূলত "চট্টগ্রামের ছেলেদের ইসলামী ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত" করা হচ্ছে। তাঁদের প্রশ্ন, কেন একমাত্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্মকর্তাদের টার্গেট করে এই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে? ​ভুক্তভোগী কর্মীদের মূল দাবিগুলো হলো: ​হাইকোর্টের রায় মেনে বিতর্কিত এই পরীক্ষা বাতিল করে নিয়মিত পদোন্নতি পরীক্ষা চালু করতে হবে। ​ছাঁটাই আতঙ্কে থাকা কর্মীদের চাকরি সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
​ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ও চলমান আতঙ্ক ​অভিযোগ ও প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই পরীক্ষা আয়োজনে আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই এবং এটি কোনো ছাঁটাই প্রক্রিয়া নয়। তাঁরা বলছেন, মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা বঞ্চিত হবেন না। ব্যাংকিং কার্যক্রমের স্বচ্ছতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও দক্ষ মানবসম্পদ নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এই মূল্যায়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করে। তবে, কর্তৃপক্ষের এমন বক্তব্যের পরও প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তাকে ছাঁটাই ও ওএসডি করা হয়েছে। অন্যায় ভাবে ছাটাই করা বন্ধ ও কর্মীদের পূনর্বহালের দাবী  করেছেন আন্দোলনকৃত কর্মীরা।
লেখকঃ যুগ্ম আহ্বায়ক, পটিয়া সচেতন নাগরিক ফোরাম

Comments

Popular posts from this blog

নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিভাগে সুযোগ না দেওয়ায় মানববন্ধন করলো রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ এর শিক্ষার্থী ও অভিভাবক

কক্সবাজারে আশ্রিতের স্ত্রীকে ধর্ষণ অতঃপর স্বামীকে হত্যা

পটিয়া হাবিলাসদ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯২ ব্যাচের পূর্ণমিলনী উৎসব আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন